'সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরুর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর'
প্রকাশ :
/ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা / ছবি-ফোকাস বাংলা
২৪খবরবিডি: 'আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরুর নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, নির্বাচনের খুব বেশি বাকি নেই। এবারের নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য খুবই চ্যালেঞ্জের হবে। জনপ্রিয়তা ও মানুষের ভোট নিয়েই জিততে হবে। তাই এখন থেকেই সবাইকে নির্বাচনের মাঠে নেমে পড়তে হবে। আওয়ামী লীগ ও নৌকার পক্ষে ভোট চাইতে হবে। জনসমর্থন বাড়াতে হবে।'শনিবার তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে এমন নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।'
'৬ আগস্ট তৃণমূল নেতাদের নিয়ে আয়োজিত দলের বিশেষ বর্ধিত সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তকে অনুমোদন দিতেই মূল এই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। যেখানে আগামী জাতীয় নির্বাচন ছাড়াও দেশের সমসাময়িক রাজনীতি ও আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি এবং দলের সাংগঠনিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নির্বাচনী প্রস্তুতি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি নিজেও নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছি। বর্তমানে আসনওয়ারী বর্তমান এমপি ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিষয়ে যাচাই-বাছাই করছি। যেহেতু নির্বাচন খুব কাছে, সেজন্য এখন চূড়ান্ত পর্যায়ের জরিপ চলছে। কোথায় কার অবস্থান, সেগুলো খুঁজে দেখছি। যারা জনপ্রিয় ও মানুষের পাশে থাকেন এবং জয়ী হতে সক্ষম তাদেরই আগামী নির্বাচনে প্রার্থী করা হবে। জনবিচ্ছিন্ন কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। একে-অপরের বিরুদ্ধে বিষোদ্গারের বিষয়ে সতর্ক: দলের বর্তমান সংসদ সদস্য ও আগামীতে মনোনয়ন পেতে ইচ্ছুকদের মানুষের পা
শে থাকার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ঢাকায় বসে থাকলে মনোনয়ন পাওয়া যাবে না। নিজ এলাকার মানুষের ঘরে ঘরে যেতে হবে। মানুষের সুখ-দুঃখে তাদের পাশে থাকতে হবে। উঠোন বৈঠক ও গণসংযোগ করতে হবে। বর্তমান এমপি ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিজেদের মধ্যে বিরোধে জড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি একে অপরের বিরুদ্ধে বিষোদ্গারের বিষয়ে সতর্ক করেন প্রধানমন্ত্রী। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টার এই বৈঠকে টানা তিন মেয়াদে তার সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। নেতাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, এসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড মানুষের মধ্যে ভালোভাবে তুলে ধরে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকারই যে দেশ ও জনগণের উন্নয়ন করে- সে বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে।'
'অক্টোবরে অনেকগুলো বৃহৎ প্রকল্প: সামনের দিনে অনেকগুলো বৃহৎ প্রকল্পের উদ্বোধন হবে জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার আগেই অক্টোবরের মধ্যে এসব প্রকল্পের উদ্বোধন করতে হবে। আগামী ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। উদ্বোধন উপলক্ষে ওইদিন বড় ধরনের জনসভা হবে। অক্টোবরে সিলেটের জনসভার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী। একই সময়ে খুলনা ও বরিশালে বিভাগীয় সমাবেশ করার কথাও জানান তিনি।
'সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরুর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর'
বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় থেকে যে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টি এবং মানিলন্ডারিং, অর্থপাচার ও লুটপাট চালিয়েছিল- সেগুলোও মানুষের মধ্যে তুলে ধরার নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি বলেন, মানুষ অতীতের কথা খুব দ্রুতই ভুলে যায়। এই কারণে বিএনপি-জামায়াতের অপকর্মগুলো মানুষকে বারবার মনে করিয়ে দিতে হবে। এগুলো মানুষের মধ্যে বেশি বেশি করে প্রচার করতে হবে। বর্তমানে তারা যে আন্দোলনের নামে দেশে অস্থিতিশীলতা, নাশকতা ও সন্ত্রাস সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে এ বিষয়েও মানুষকে সতর্ক করে দিতে হবে।'
'দ্বন্দ্ব-কোন্দল দ্রুত মিটিয়ে ফেলতে হবে: সারাদেশে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকদের ভারমুক্ত করে পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব দেওয়া সংক্রান্ত বিশেষ বর্ধিত সভার সিদ্ধান্ত বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, যাদের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাদের দলের জন্য ভালোভাবে কাজ করতে হবে। তাঁরাসহ সব নেতাকেই তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত দলকে গুছিয়ে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করে তুলতে হবে। কোথাও কোনো দ্বন্দ্ব-কোন্দল থাকলে, সেগুলো দ্রুত মিটিয়ে ফেলতে হবে। সবাইকে নিয়ে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। এ সময় কিছুটা ক্ষোভ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, পুরনো ও ত্যাগী নেতারা, যাঁরা দলের জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন- তাদের কাউকে বাদ দেওয়া যাবে না। কেননা তাঁরাই দলের নিবেদিতপ্রাণ, দলকে ধরে রেখেছেন। কমিটি গঠনের বেলায় তাদেরই প্রাধান্য দিতে হবে, উপযুক্ত মূল্যায়ন করতে হবে। নতুন আসা কাউকে কমিটিতে আনা যাবে না: তিনি বলেন, বিভিন্ন দল থেকে আওয়ামী লীগে নতুন আসা কাউকে কমিটিতে আনা যাবে না। এরই মধ্যে অনেক হাইব্রিড নেতাই দলের বিভিন্ন কমিটিতে ঢুকে পড়েছেন। নতুন করে হাইব্রিড কেউ যেন কমিটিতে পদ-পদবী পেয়ে যেতে না পারেন- এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। যেসব জেলায় এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনো গঠন হয়নি, দ্রুত সময়ের মধ্যে সেগুলোতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের তাগিদ দেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঞ্চালনায় বৈঠকে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।'